ঢাকার আশুলিয়ায় পোশাক কারখানা কেএসি কম্পোজিট নিট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে বেআইনিভাবে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এবং শ্রমিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে আশুলিয়ার বাইপাইলে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
এসময় ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কামরান, ইউনাইটেড গার্মেন্টস ফেডারেশনের সভাপতি ইমন সিকদার, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধন থেকে শ্রমিকরা জানান, গত ২৯ মার্চ সকালে আশুলিয়ার কবিরপুর এলাকার কেএসি কম্পোজিট কারখানায় ১৩ শ্রমিককে রিজাইন লেটারে স্বাক্ষর নিয়ে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগে শুধু ঈদের বোনাস দিতে চাইলেও চাকরিচ্যুতির অন্যান্য সুবিধা দিতে রাজি নয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানাটির সুইং সেকশনের হেলপার জুলেখা বেগম বলেন, ২৯ মার্চ সকালে বলা হয়, আমাদের লাইন বন্ধ, কাজ নেই। সাইন দিয়ে আমরা যেন চলে যাই। এর আগে কর্তৃপক্ষ বলেছিল, দেরি করলে বা অনুপস্থিত থাকলে চাকরি থেকে বের করে দেবে। আমার ছেলেটা আগুনে পুড়েছিল। তখন আমি গত এক বছরে মাত্র তিন দিন অনুপস্থিত ছিলাম। আমার ব্যাপারে কোম্পানির সবাই জানে। আমার ছেলের এখনো চিকিৎসা চলে। আমি কীভাবে তার খরচ মেটাব? আমার আগুনে পোড়া ছেলেকে নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকব? ঈদের আগে তো কেউ চাকরি দেবে না।
কারখানার আরেক হেলপার আক্তারিনা বলেন, আমি দুই বছর ধরে চাকরি করি এখানে। আমাদের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। ঈদের আগে আমাদের এভাবে বের করে দিল। এখন তো আমরা কোথাও চাকরিও পাব না। আমরা চাই আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দিক। আমরা রিজাইন লেটারে সাইন করতে চাইনি। আমাদের সব বেতন-ভাতা আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হোক।
মানববন্ধনে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্থানীয় মাস্তান বাহিনী দিয়ে শ্রমিকদের হয়রানি করারও অভিযোগ আছে। শ্রমিকদের কোনো নোটিশ না দিয়ে এভাবে বের করে দেওয়া অমানবিক। এ ছাড়া কাউকে চাকরিচ্যুত করতে চাইলে তার পাওনাদিসহ টার্মিনেশন বেনিফিট দিতে হবে। আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে কারখানাটির পরিচালক ফারুক আহমেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন করা হলে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।