মোঃ ফারুক হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকার ধামরাইয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের না জানিয়েই নিজ প্রতিষ্ঠানকে প্রথম পছন্দ রেখে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে ধামরাই উপজেলার সূয়াপুর নান্নার স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে এসএসএসি পাশ করা অনেক শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে নিজ পছন্দ অনুযায়ী ভর্তির আবেদন করতে পারেননি। এতে এসব শিক্ষার্থীর পছন্দের কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত এখন। তবে শিক্ষাবোর্ড দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে আবেদনের সুযোগ করে দিলে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের কলেজে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। ২০২৩ সালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কলেজে ভর্তির আবেদন অনলাইনে করতে ১০ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় শিক্ষা বোর্ড। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, কলেজে ভর্তির আবেদন শুরু হওয়ায় অনলাইনে আবেদনের জন্য তারা যায়। আবেদন ফরম পূরণ করে সেন্ট করা হলে সার্ভার তা গ্রহণ করে না। শুধু রিপ্লাই আসে ইতোপূর্বে আবেদন করা হয়েছে। সেখানে সূয়াপুর নান্নার স্কুল এন্ড কলেজকে প্রথম পছন্দ দেখায়। জানা গেছে, আবেদন শুরুর দিনেই (১০ আগস্ট) সূয়াপুর নান্নার স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে নিজ কলেজকে পছন্দের তালিকায় রেখে অনলাইনে আবেদন করে রাখেন। শিক্ষার্থীরা যখন তাদের পছন্দের কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করতে যায় তখন অনলাইনে তাদের আবেদন গ্রহণ না করে ইতোপূর্বে আবেদন করা হয়েছে মর্মে নোটিশ আসে। ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, আমি ৩.৩৩ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছি। বাজারে কম্পিউটার দোকানে গিয়ে কলেজে ভর্তির আবেদন করতে গেলে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হয়ে রিপ্লাই আসে আমার আবেদন ইতিপূর্বেই হয়ে গেছে যেখানে প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে সূয়াপুর নান্নার স্কুল এন্ড কলেজ। কিন্তু আমি এর আগে আবেদন করি নাই। আমি পাঁচবছর এই প্রতিষ্ঠানে পড়েছি এখন আমি অন্য একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে চাই কিন্তু আমার আবেদন কিভাবে হলো আমি জানি না আমি এখন পছন্দের কলেজে ভর্তি হবো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন কাণ্ডের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক। তিনি বলছেন, প্রতিযোগিতার শিক্ষায় সন্তানদের একটা ভালো সরকারি কলেজে ভর্তি করার সুযোগ রইল না। এই কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করে রেখেছে। আমরা তা জানতাম না। এখন অন্য কলেজে ভর্তির আবেদন নেয় না। সন্তানরা এই কলেজে ভর্তি হতে চায় না। আমার ছেলেকে ও সরকারি কলেজে ভর্তি করার নিয়ত করেছি। কর্তৃপক্ষের লোভের কারণে সন্তানদের পড়ালেখা মনে হয় অনিশ্চিয়তার দিকে।
এ ব্যাপারে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ আনোয়ার তালুকদারের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জানান, আমি এবিষয়ে এখনও কিছু জানি না। আমি এখন প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি চলে আসছি। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী জানান, ধামরাই উপজেলার কতিপয় স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অনুমতি ব্যতীত তাদের তথ্য ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন দাখিল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরণের কাজ অনৈতিক, বেআইনি এবং অগ্রহণযোগ্য। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।