ঢাকার সাভারে আওয়ামী লীগের এক নেত্রীকে মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় উজ্জ্বল হোসাইন নামের এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৭ মে) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা। এর আগে, শুক্রবার ভোরে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাভার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সংরক্ষিত নারী সদস্য ও ঢাকা জেলা উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শারমীন হককে মারধরের অভিযোগে তাঁর স্বামীর করা মামলায় ওই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়। উজ্জ্বল দৈনিক আগামীর সময় পত্রিকার সাভার উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ জানায়, ১৯ মে উজ্জ্বল হোসাইনকে ১ নম্বর আসামি করে তাঁর বাবা বেনু মোল্লা, বড় ভাই মৃদুল মোল্লা, শ্যালিকা মোছাম্মৎ মোহনা ও মোছাম্মৎ সেলিনা বেগমের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন শারমীন হকের স্বামী ওবায়দুল হক। তাঁরা সবাই সাভারের উত্তর চাপাইনের লালটেক এলাকার বাসিন্দা।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বলা হয়, পূর্বশত্রুতার জেরে ১৯ মে সন্ধ্যায় উজ্জ্বল হোসেন, অন্য আসামিরাসহ বেশ কয়েকজন শারমীন হকের বাড়িতে যান। তাঁরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে শারমীন হককে মারধর করেন। শারমীনকে বাঁচাতে গেলে তাঁর স্বামী ওবায়দুল হক ও ছেলে শাহরিয়ার শ্রাবণকেও মারধর করা হয়। পরে তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন শারমীনের বাড়িতে গেলে আসামিরা সেখান থেকে চলে যান। এরপর শারমীন হকসহ আহত ব্যক্তিরা সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
গ্রেপ্তার উজ্জ্বল হোসাইনের বোনের স্বামী মো. জালাল বলেন, একটি সাজানো মামলায় উজ্জ্বল হোসাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসল ঘটনা হলো, পাঁচ দিন আগে শারমীন হকের মেয়ে স্থানীয় এক নারীর মুঠোফোন নিয়ে কথা বলছিলেন। শারমীন সেটি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই মুঠোফোনটি নিয়ে ভেঙে ফেলেন এবং ওই নারীকে মারধর করেন। পরে উজ্জ্বলসহ এলাকার স্থানীয় মুরুব্বিদের ওই নারী বিষয়টি জানান। পরে উজ্জ্বলসহ কয়েকজন বিষয়টি জানতে সেখানে গেলে শারমীন হক ও তাঁর ছেলে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে উজ্জ্বলকে শারমীন হকের ছেলে ধাক্কা দেন। তখন দুজনের মধ্যে সামান্য হাতাহাতি হয়। এ সময় শারমীন দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁকে কেউ আঘাত করেননি। এরপরও তাঁরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মামলা করেছেন। তিনি উজ্জ্বলের মুক্তিসহ তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
মামলার বাদী ওবায়দুল হক বলেন, প্রতিনিয়ত তাঁদের দ্বারা এলাকার লোকজন নির্যাতিত হচ্ছে। উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। আমাদের ঘরে এসে তাঁরা আমাদের মারধরের পর বসতবাড়িতে ভাঙচুর করে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ওবায়দুল হক নামের এক ব্যক্তির করা মারধর ও শ্লীলতাহানির মামলায় উজ্জ্বল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মামলা রুজু করা হয়। শুক্রবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।