ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে যানজটে আটকা মাইক্রোবাসে ডাকাতি

গাজীপুরের যানজটে আটকা মাইক্রোবাসে ডাকাতি
তারিকুল জুয়েল, গাজীপুরঃ
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটে আটকা পড়া একটি মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বৃস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে চন্দ্রা ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় ১০ থেকে ১২ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল যানজটে আটকা পড়া মাইক্রোবাসটির গ্লাস ভাঙচুর করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন লুট করে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসের এক নারী যাত্রীর কান ছিঁড়ে সোনার দুল নিয়ে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা। মাইক্রোবাসটিতে ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা ও তার পরিবারের সদস্যরা। ঈদের ছুটিতে মাইক্রোবাসটিতে করে তারা গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন।
ডাকাতির কবলে পড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবু হেনা মোস্তফা, তার স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনেরা মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে রংপুর যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। রাতে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকা অতিক্রম করার পর যানজটে আটকা পড়েন। সেখান থেকে তারা ধীরগতিতে টাঙ্গাইলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। থেমে থেমে এগিয়ে গিয়ে রাত সোয়া একটার দিকে উপজেলার চন্দ্রা ফরেস্ট রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে আবারও যানজটে আটকা পড়েন।

এমন সময় মহাসড়কের দক্ষিণ পাশ থেকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে মাইক্রোবাসে আক্রমণ করে। ভেতর থেকে গ্লাস না খোলায় ডাকাতেরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গাড়ির দুই পাশের চারটি গ্লাস ভেঙে ফেলে। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা ভেতরে থাকা সবাইকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে টাকা, মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে আবু হেনা মোস্তফা বলেন, ডাকাতেরা মাইক্রোতে থাকা তার স্বজনের কানে সোনার দুল দেখতে পায়। এ সময়ে তারা কান থেকে স্বর্ণালংকার ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তার কানের লতি ছিঁড়ে যায়। তার কান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে দ্রুত কালিয়াকৈর সাহেববাজার এলাকার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার দুই কানেই ৯টি সেলাই দেয়া হয়। এ ছাড়া আঘাত পাওয়া অন্যদেরও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মাইক্রোবাসের চালক আলমগীর হোসেন বলেন, রাতে মহাসড়কে ব্যাপক যানজট ছিল। যানজটের মধ্যে চন্দ্রা ফরেস্ট অফিসের সামনে আটকে যাই। সেখানে অনেকক্ষণ ধরে যানজটে থাকা অবস্থায় হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল মাইক্রোবাসে হামলা করে। হামলাকারীদের মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ডাকাতেরা তাদের হাতে থাকা রামদা, চায়নিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে আঘাত করতে থাকে আর জিনিসপত্র লুট করে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, এলাকাটির দুই পাশে ঘন জঙ্গল। সেই সুযোগে ছিনতাইকারীরা সেখানে ওত পেতে থেকে এমন হামলার ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। ঘটনা জানার পরপরই আমিসহ পুলিশের একাধিক ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

গাজীপুরে যানজটে আটকা মাইক্রোবাসে ডাকাতি

আপডেট সময় ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩

গাজীপুরের যানজটে আটকা মাইক্রোবাসে ডাকাতি
তারিকুল জুয়েল, গাজীপুরঃ
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটে আটকা পড়া একটি মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বৃস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে চন্দ্রা ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় ১০ থেকে ১২ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল যানজটে আটকা পড়া মাইক্রোবাসটির গ্লাস ভাঙচুর করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন লুট করে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসের এক নারী যাত্রীর কান ছিঁড়ে সোনার দুল নিয়ে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা। মাইক্রোবাসটিতে ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা ও তার পরিবারের সদস্যরা। ঈদের ছুটিতে মাইক্রোবাসটিতে করে তারা গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন।
ডাকাতির কবলে পড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবু হেনা মোস্তফা, তার স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনেরা মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে রংপুর যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। রাতে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকা অতিক্রম করার পর যানজটে আটকা পড়েন। সেখান থেকে তারা ধীরগতিতে টাঙ্গাইলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। থেমে থেমে এগিয়ে গিয়ে রাত সোয়া একটার দিকে উপজেলার চন্দ্রা ফরেস্ট রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে আবারও যানজটে আটকা পড়েন।

এমন সময় মহাসড়কের দক্ষিণ পাশ থেকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে মাইক্রোবাসে আক্রমণ করে। ভেতর থেকে গ্লাস না খোলায় ডাকাতেরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গাড়ির দুই পাশের চারটি গ্লাস ভেঙে ফেলে। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা ভেতরে থাকা সবাইকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে টাকা, মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে আবু হেনা মোস্তফা বলেন, ডাকাতেরা মাইক্রোতে থাকা তার স্বজনের কানে সোনার দুল দেখতে পায়। এ সময়ে তারা কান থেকে স্বর্ণালংকার ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তার কানের লতি ছিঁড়ে যায়। তার কান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে দ্রুত কালিয়াকৈর সাহেববাজার এলাকার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার দুই কানেই ৯টি সেলাই দেয়া হয়। এ ছাড়া আঘাত পাওয়া অন্যদেরও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মাইক্রোবাসের চালক আলমগীর হোসেন বলেন, রাতে মহাসড়কে ব্যাপক যানজট ছিল। যানজটের মধ্যে চন্দ্রা ফরেস্ট অফিসের সামনে আটকে যাই। সেখানে অনেকক্ষণ ধরে যানজটে থাকা অবস্থায় হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল মাইক্রোবাসে হামলা করে। হামলাকারীদের মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ডাকাতেরা তাদের হাতে থাকা রামদা, চায়নিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে আঘাত করতে থাকে আর জিনিসপত্র লুট করে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, এলাকাটির দুই পাশে ঘন জঙ্গল। সেই সুযোগে ছিনতাইকারীরা সেখানে ওত পেতে থেকে এমন হামলার ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। ঘটনা জানার পরপরই আমিসহ পুলিশের একাধিক ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।