খাবার গ্রহণ করা থেকে শুরু করে হজম হওয়া, খাবার থেকে শক্তি বানিয়ে কোষে কোষে পৌঁছে যাওয়া- এরকম যাবতীয় কাজের সমন্বয় হল বিপাক প্রক্রিয়া। আর এই কাজের গতি ধীর হলে নানান সমস্যা শুরু হয়।
এক্ষেত্রে কফি উপকারী ভূমিকা রাখে বলে জানান, মার্কিন চিকিৎসক ও ‘ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক সেন্টার ফর ফাংশনাল মেডিসিন’য়ের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক উইলিয়াম ডব্লিউ লি.
মাইন্ডবডিগ্রিন ডটকম’য়ের সম্প্রচারিত একটি পডকাস্টের পর্বে তিনি, কফিকে উচ্চ শ্রেণীর বিপাক বর্ধক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন।
কফি কি বিপাক বাড়ায়?
ডা. লি বলেন, “কফিতে রয়েছে কিছু ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড যা বিপাক বাড়ানোর পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখে। এটা সংবহনতন্ত্র রক্ষা করে এবং বিপাক বাড়াতেও সহায়তা করে।”
‘এভিডেন্স-বেইজড কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত দক্ষিণ কোরিয়ার ‘ইয়োনসেই ইউনিভার্সিটি’র করা গবেষণায় দেখা গেছে, কফি এবং গ্রিন কফি (ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ) ওজন কমাতে এবং দেহের ইন্সুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
অন্যদিকে ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের করা আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল নারী প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপ কফি পান করেন তাদের অন্যদের তুলনায় দ্রুত ওজন কমে।
‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অব নিউট্রিশন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিপাকীয় সিন্ড্রোম’য়ের ওপর আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা দৈনিক এক কাপের কম কফি পান করেছেন, তাদের তুলনায় যারা প্রতিদিন তিন কাপের বেশি কফি পান করেন, এদের বরং বিএমআই, কোমড়ের মাপ, রক্তচাপ এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম হতে দেখা গেছে।
বলা যায়, কফি বিপাক বাড়াতে সহায়তা করে। ডা. লি কফিকে তার মূল বিপাক বর্ধক হিসেবে বিবেচনা করেন।
কফি নিজেই শক্তি খরচ বর্ধনের দিক থেকে ক্লিনিক্যালি পরিচিত। এটা শক্তি ব্যবহার (ক্যালরি খরচ), থার্মোজেনিক ফ্যাট বার্ন (লিপোলাইসিস) এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
তাই ওজন কমাতে চাইলে বিপাক বর্ধক সম্পূরক কফি গ্রহণ উপকারী।
বিপাক বাড়াতে কফি পানের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক কফি খেতে হবে। এতে কৃত্রিম স্বাদ বা চিনি যোগ করা যাবে না।
মনে রাখা প্রয়োজন
ডা. লি’য়ের মতে, কিছু খাবার বিপাক বাড়াতে সহায়তা করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। তিনি এক্ষেত্রে কফিকে বিপাক বর্ধক হিসেবে বিবেচনা করেন।
তবে, একেকজনের খাদ্যাভ্যাস এক এক রকম হওয়ার কারণে তিনি ব্যক্তিভেদে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করার দিকে গুরুত্ব দেন।