মোঃ ফারুক হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকার ধামরাইয়ে একেবারেই নিবৃত্ত পল্লী এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হবে এমন প্রত্যাশা নিয়ে ১৫ বছর পূর্বে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিবের বরাবর ৩৩ শতাংশ ভূমি দানপত্র দলিল দেন গ্রামের হিতৈষী ব্যক্তিরা। এমন একটি বিদ্যালয়ের দেখা মিলে উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের ভাকুলিয়া গ্রামে।
শর্তঅনুযায়ী জমি দান করে দিলেও এখনো সরকারীভাবে কোন স্বীকৃতিই পায়নি ভাকুলিয়া ধুম কেতু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত ৫ নং ওয়ার্ডে ছোট-বড় গ্রাম রয়েছে ৫ টি। জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় চার হাজার। এ ওয়ার্ডে ছোট ছোট কোমলমতি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেনি। এমনকি আড়াই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যেও কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।
ভাকুলিয়া এলাকায় কোন বিদ্যালয় না থাকার কারণে কোমলমতি শিশুদের দূরের অন্য গ্রামের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরা থাকেন মহা-দুঃশ্চিতায়।
৫ নং ওয়ার্ডের অর্থাৎ ৫ টি গ্রামের কোমলমতি ছেলে- মেয়েদের লেখা পড়ার কথা চিন্তা করে গ্রামের হিতৈষী ব্যক্তিবর্গ ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিজেদের খরচে ১৯৯৪ সালে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এখানে টিন কাঠ/ বাশ দিয়ে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট দুইটি ঘরও নির্মাণ করা হয় । এ বিদ্যালয়ের নাম দেয়া হয় ভাকুলিয়া ধুম কেতু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এরপর ১৯৯৭ সাল থেকে যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। এরমধ্যেই ১৯৯৮ সালে ২৬ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিবের বরাবর ৩৩ শতাংশ ভূমি দানপত্র দলিল করেও দেয়া হয়।
ভাকুলিয়া ধুম কেতু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ২০০২ সাল পর্যন্ত সুনামের সহিত শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যায় অবৈতনিক শিক্ষকরা।
ওই সময় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকির ও দায়িত্বে অবহেলা অন্যদিকে শিক্ষকদের সম্মানী না দেয়ার কারণে দিনে দিনে বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে। বিদ্যালয়টি থালকেও নেই কোন শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যালয় বন্ধের কারণে পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে পড়ছে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে ওই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম না চললে ও রয়েছে সেই টিনের ঘর ও সামনে রয়েছে উন্মুক্ত খেলার মাঠ। এ মাঠে বিকেলে ছোট ছোট ছেলে – মেয়েদের খেলা- ধূলা করতে দেখা যায়। মাঠে খেলা- ধূলার চর্চা থাকলেও নেই বিদ্যালয়ে ছেলে মেয়েদের লেখা-পড়া।
সরকারের কাছে গ্রাম বাসীর জুড়ালো দাবি বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে যেন সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত করে পুণঃরায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়।
এ প্রসঙ্গে চৌহাট ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ভাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সারোয়ার সরকার বলেন, কোমলমতি শিশুদের লেখা পড়ার কথা চিন্তা করে আমি আবুল কালাম আজাদ এবং রফিজ উদ্দিন সিদ্দিকী ১৯৯৮ সালে ২৬ জুলাই ৬৭৯৩ নং দলিল মূলে ৩৩ শতাংশ ভূমি স্কুলের নামে দান করে দিয়েছি।
চৌহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি বলেন, ওই গ্রামে বিদ্যালয় থাকাটা অত্যান্ত জরুরি কেননা এর আশপাশেও কোন স্কুল নেই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) তাজমু্ন্নাহার বলেন, বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে আমি আমার উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সাথে কথা বলবো।