ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেন্টাগনের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ

পেন্টাগনের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ

মার্কিন গণমাধ্যমে তথ্য ফাঁস হওয়ার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) তিনি এই মন্তব্য করেন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন গণমাধ্যমে তথ্য ফাঁস হওয়ার পর পেন্টাগন মেক্সিকোর সরকারের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে বলে মঙ্গলবার অভিযোগ এনেছেন আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর। মেক্সিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর তথ্য এখন থেকে সুরক্ষিত করা শুরু করবেন তিনি।

 

রয়টার্স বলছে, মেক্সিকোর নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা সম্পর্কে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করার বেশ কয়েক দিন পর প্রেসিডেন্ট ওব্রাডরের এই মন্তব্য সামনে এলো।

মূলত মেক্সিকান নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা সম্পর্কে অনলাইনে মার্কিন রেকর্ড প্রকাশের পর মার্কিন সামরিক ব্রিফিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের ওই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছিল।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার লোপেজ ওব্রাডর তার দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা এখন থেকে নৌবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল তথ্য সুরক্ষিত করতে যাচ্ছি, কারণ আমরা পেন্টাগনের গুপ্তচরবৃত্তির শিকার হয়েছি।’

এদিকে এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পেন্টাগনও। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেছেন, মেক্সিকোর সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর সাথে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের ‘দৃঢ় সহযোগিতামূলক প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব’ রয়েছে এবং এসব সংস্থা ‘একে অপরের সার্বভৌমত্ব এবং নিজ নিজ বৈদেশিক নীতির এজেন্ডাকে সম্মান করে’ অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে থাকে।

অবশ্য পেন্টাগন এর আগে গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস হওয়াকে ‘ইচ্ছাকৃত, অপরাধমূলক কাজ’ বলে অভিহিত করেছে। ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, উদ্ধৃত নথিটি মেক্সিকান কর্মকর্তাদের যোগাযোগে আড়ি পেতে হস্তগত করা হয়েছে এমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

রয়টার্স বলছে, মেক্সিকোর সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে গুম এবং হত্যাসহ বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে এবং এই কারণে সামরিক বাহিনীকে জবাবদিহি করার জন্য চাপের মুখে রয়েছেন লোপেজ ওব্রাডোর।

কিন্তু এরপরও মেক্সিকোর এই প্রেসিডেন্ট জননিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা বাড়িয়েছেন এবং ন্যাশনাল গার্ড নামে সামরিকায়িত পুলিশ বাহিনীকে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছেন।

এর আগে গত সোমবার মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসকে ‘অপমানজনক এবং কোনও পরিস্থিতিতেই গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে উল্লেখ করেন লোপেজ ওব্রাডোর। তবে এই কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে তিরস্কার করার পরিকল্পনা তার নেই বলেও সেদিন জানান তিনি।

অন্যদিকে মঙ্গলবার তার সরকারের আমলে বিতর্কিত স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহারের নতুন অভিযোগের বিষয়টি সামনে আনা হলে লোপেজ ওব্রাডোর দাবি করেন, তার প্রশাসন গুপ্তচরবৃত্তি করে না।

অবশ্য সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী বক্তব্য রেখেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওব্রাডর। গত মার্চ মাসে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে মেক্সিকো নিরাপদ দেশ বলে দাবি করেন। মেক্সিকো সীমান্তের কাছে মারাত্মক এক অপহরণের ঘটনায় দুই আমেরিকানের প্রাণহানি এবং এর জেরে সৃষ্ট সমালোচনার জবাবে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট সেসময় একথা বলেন।

ওই ঘটনার সপ্তাহখানেক পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দেন প্রেসিডেন্ট ওব্রাডর। মেক্সিকান সরকারের মানবাধিকার রেকর্ড ইস্যুতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রেকর্ড সামনে আসার পর তিনি এই দাবি করেছিলেন।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

গ্রিন টিভি বাংলা

গ্রিন টিভি বাংলার একটি সম্পূর্ন অনলাইন ফেজবুক,ইউটিউব, নিউজপোর্টাল ভিক্তিক টিভি চ্যানেল । যে কোন বিষয় মতামত দিয়ে আমাদেকে সহযোগিতা করুন এবং নিউজ পড়ুন বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন

পেন্টাগনের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩

মার্কিন গণমাধ্যমে তথ্য ফাঁস হওয়ার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) তিনি এই মন্তব্য করেন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন গণমাধ্যমে তথ্য ফাঁস হওয়ার পর পেন্টাগন মেক্সিকোর সরকারের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে বলে মঙ্গলবার অভিযোগ এনেছেন আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর। মেক্সিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর তথ্য এখন থেকে সুরক্ষিত করা শুরু করবেন তিনি।

 

রয়টার্স বলছে, মেক্সিকোর নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা সম্পর্কে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করার বেশ কয়েক দিন পর প্রেসিডেন্ট ওব্রাডরের এই মন্তব্য সামনে এলো।

মূলত মেক্সিকান নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা সম্পর্কে অনলাইনে মার্কিন রেকর্ড প্রকাশের পর মার্কিন সামরিক ব্রিফিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের ওই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছিল।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার লোপেজ ওব্রাডর তার দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা এখন থেকে নৌবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল তথ্য সুরক্ষিত করতে যাচ্ছি, কারণ আমরা পেন্টাগনের গুপ্তচরবৃত্তির শিকার হয়েছি।’

এদিকে এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পেন্টাগনও। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেছেন, মেক্সিকোর সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর সাথে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের ‘দৃঢ় সহযোগিতামূলক প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব’ রয়েছে এবং এসব সংস্থা ‘একে অপরের সার্বভৌমত্ব এবং নিজ নিজ বৈদেশিক নীতির এজেন্ডাকে সম্মান করে’ অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে থাকে।

অবশ্য পেন্টাগন এর আগে গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস হওয়াকে ‘ইচ্ছাকৃত, অপরাধমূলক কাজ’ বলে অভিহিত করেছে। ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, উদ্ধৃত নথিটি মেক্সিকান কর্মকর্তাদের যোগাযোগে আড়ি পেতে হস্তগত করা হয়েছে এমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

রয়টার্স বলছে, মেক্সিকোর সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে গুম এবং হত্যাসহ বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে এবং এই কারণে সামরিক বাহিনীকে জবাবদিহি করার জন্য চাপের মুখে রয়েছেন লোপেজ ওব্রাডোর।

কিন্তু এরপরও মেক্সিকোর এই প্রেসিডেন্ট জননিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা বাড়িয়েছেন এবং ন্যাশনাল গার্ড নামে সামরিকায়িত পুলিশ বাহিনীকে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছেন।

এর আগে গত সোমবার মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসকে ‘অপমানজনক এবং কোনও পরিস্থিতিতেই গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে উল্লেখ করেন লোপেজ ওব্রাডোর। তবে এই কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে তিরস্কার করার পরিকল্পনা তার নেই বলেও সেদিন জানান তিনি।

অন্যদিকে মঙ্গলবার তার সরকারের আমলে বিতর্কিত স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহারের নতুন অভিযোগের বিষয়টি সামনে আনা হলে লোপেজ ওব্রাডোর দাবি করেন, তার প্রশাসন গুপ্তচরবৃত্তি করে না।

অবশ্য সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী বক্তব্য রেখেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওব্রাডর। গত মার্চ মাসে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে মেক্সিকো নিরাপদ দেশ বলে দাবি করেন। মেক্সিকো সীমান্তের কাছে মারাত্মক এক অপহরণের ঘটনায় দুই আমেরিকানের প্রাণহানি এবং এর জেরে সৃষ্ট সমালোচনার জবাবে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট সেসময় একথা বলেন।

ওই ঘটনার সপ্তাহখানেক পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দেন প্রেসিডেন্ট ওব্রাডর। মেক্সিকান সরকারের মানবাধিকার রেকর্ড ইস্যুতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রেকর্ড সামনে আসার পর তিনি এই দাবি করেছিলেন।