ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীম পাস হলে বাংলাদেশ ইইউর বাজারে বাণিজ্যিক সুবিধা হারাবে

প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীম পাস হলে বাংলাদেশ ইইউর বাজারে বাণিজ্যিক সুবিধা হারাবে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীম পাস হলে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সকল ধরনের বাণিজ্যিক সুবিধা হারাবে। ফলে রপ্তানিকারকরা তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবে এবং রপ্তানি বহুলাংশে কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।এমতাবস্থায় সরকার ও বেসরকারি (উদ্যোক্তা) পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কৌশল নির্ধারণ করে কার্যকর আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে, যেন বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুন্ন থাকে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি সম্প্রসারণে কমপ্লায়েন্স বিষয়ক সচেতনতা’ শীর্ষক কর্মশালায় এমন পরামর্শ উঠে আসে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্মশালার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা,পোশাকখাতের উদ্যোক্তা এবং সংশ্লিষ্ট খাতের বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিখি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং কী-নোট উপস্থাপন করেন গবেষণা সংস্থা র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্যানেল আলোচক ছিলেন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ড. মোস্তফা আবিদ খান ও বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান।
অর্থনীতিবিদ ড. এম এ রাজ্জাক মুল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন ইইউর প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীম যদি পাস পায়,তাহলে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে কোন সুবিধা পাবে না। কানাডায় শুল্কমুক্ত সুবিধা হারানোর ফলে সেখানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে যেভাবে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। একই ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে ইইউতে। তাই এখনই আমাদের সুনির্দিষ্ট কৌশল নির্ধারণ করে ইইউর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরে বাংলাদেশ যদি কোন কারণে ইইউতে বাণিজ্যিক সুবিধা না পায়। তাহলে বৈশ্বিক পর্যায়ে পোশাকের দাম ৭-৮ শতাংশ বেড়ে যাবে। কারণ বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সোর্সিং দেশ। তিনি বলেন, জিএসপি সুবিধা হারালে বাংলাদেশকে ১২ শতাংশ হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। যার ফলে বৈশ্বিক পর্যায়ে পোশাকের দাম ৭-৮ শতাংশ বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন বৈশ্বিক দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তখন দাম বাড়ানোর সুযোগ পাবে। একইসাথে পোশাক কারখানাকে যদি আরও অটোমেশন করা যায়, তাহলে উৎপাদন খরচ হ্রাস পাবে। এতে করে রপ্তানিকারকদের মুনাফা করার সুযোগ থাকবে।
উল্লেখ্য,এভরিথিঙ্ক বাট আর্মস (ইবিএ) স্কীম সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ ইইউর বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যিক সুবিধা পেয়ে আসছে। কিন্তু ২০২৪-৩৪ সালের জন্য ইইউ যে জিএসপি স্কিম প্রস্তাব করেছে, সেখানে এই সুবিধা রাখা হয়নি। বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েট করবে ২০২৬ সালে। এরপর আরও তিন বছর গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে জিএসপি সুবিধা পাওয়ার কথা রয়েছে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন,ইইউ প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীমের আওতায় আমাদের স্বার্থ যেন অক্ষুন্ন থাকে,সেজন্য সরকার উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এনগেজমেন্ট বাড়াচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদেরকেও ইইউর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

গ্রিন টিভি বাংলা

গ্রিন টিভি বাংলার একটি সম্পূর্ন অনলাইন ফেজবুক,ইউটিউব, নিউজপোর্টাল ভিক্তিক টিভি চ্যানেল । যে কোন বিষয় মতামত দিয়ে আমাদেকে সহযোগিতা করুন এবং নিউজ পড়ুন বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন

প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীম পাস হলে বাংলাদেশ ইইউর বাজারে বাণিজ্যিক সুবিধা হারাবে

আপডেট সময় ০৭:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ মে ২০২৩

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীম পাস হলে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সকল ধরনের বাণিজ্যিক সুবিধা হারাবে। ফলে রপ্তানিকারকরা তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবে এবং রপ্তানি বহুলাংশে কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।এমতাবস্থায় সরকার ও বেসরকারি (উদ্যোক্তা) পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কৌশল নির্ধারণ করে কার্যকর আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে, যেন বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুন্ন থাকে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি সম্প্রসারণে কমপ্লায়েন্স বিষয়ক সচেতনতা’ শীর্ষক কর্মশালায় এমন পরামর্শ উঠে আসে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্মশালার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা,পোশাকখাতের উদ্যোক্তা এবং সংশ্লিষ্ট খাতের বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিখি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং কী-নোট উপস্থাপন করেন গবেষণা সংস্থা র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্যানেল আলোচক ছিলেন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ড. মোস্তফা আবিদ খান ও বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান।
অর্থনীতিবিদ ড. এম এ রাজ্জাক মুল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন ইইউর প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীম যদি পাস পায়,তাহলে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে কোন সুবিধা পাবে না। কানাডায় শুল্কমুক্ত সুবিধা হারানোর ফলে সেখানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে যেভাবে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। একই ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে ইইউতে। তাই এখনই আমাদের সুনির্দিষ্ট কৌশল নির্ধারণ করে ইইউর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরে বাংলাদেশ যদি কোন কারণে ইইউতে বাণিজ্যিক সুবিধা না পায়। তাহলে বৈশ্বিক পর্যায়ে পোশাকের দাম ৭-৮ শতাংশ বেড়ে যাবে। কারণ বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সোর্সিং দেশ। তিনি বলেন, জিএসপি সুবিধা হারালে বাংলাদেশকে ১২ শতাংশ হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। যার ফলে বৈশ্বিক পর্যায়ে পোশাকের দাম ৭-৮ শতাংশ বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন বৈশ্বিক দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তখন দাম বাড়ানোর সুযোগ পাবে। একইসাথে পোশাক কারখানাকে যদি আরও অটোমেশন করা যায়, তাহলে উৎপাদন খরচ হ্রাস পাবে। এতে করে রপ্তানিকারকদের মুনাফা করার সুযোগ থাকবে।
উল্লেখ্য,এভরিথিঙ্ক বাট আর্মস (ইবিএ) স্কীম সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ ইইউর বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যিক সুবিধা পেয়ে আসছে। কিন্তু ২০২৪-৩৪ সালের জন্য ইইউ যে জিএসপি স্কিম প্রস্তাব করেছে, সেখানে এই সুবিধা রাখা হয়নি। বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েট করবে ২০২৬ সালে। এরপর আরও তিন বছর গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে জিএসপি সুবিধা পাওয়ার কথা রয়েছে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন,ইইউ প্রস্তাবিত জিএসপি স্কীমের আওতায় আমাদের স্বার্থ যেন অক্ষুন্ন থাকে,সেজন্য সরকার উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এনগেজমেন্ট বাড়াচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদেরকেও ইইউর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।